লিউকেমিয়া আক্রান্ত ডালিয়ার বাঁচার আকুল আবেদন।

কিছুদিন ধরে কেমন যেন অশান্তি লাগছিল। কিছু ভালো লাগতো না। হঠাৎ একদিন দেখি শরীরে চাকা চাকা উঠছে। কালচে দাগ। কয়েক দিনের ব্যবধানে শরীরটা কালো হয়ে যায়। এর মধ্যে শুরু হয় ব্লিডিং! রক্তের রং একেবারেই কালো! অল্প দু'একদিনের ব্যবধানে আমি বেশ দুর্বল হয়ে যাই!

প্রথমে কক্সবাজার সদরে হাসপাতালে যাই। সেখানে কোন ভালো ফলাফল না পেয়ে অন্য অনেকের পরামর্শে প্রথমে ইউনিয়ন হাসপাতাল ও পরে সী সাইড হাসপাতালে ভর্তি হই। সেখানে প্রায় পনের ষোল ধরনের টেস্টের পর জানানো হয়, আমার রক্তের কোন খারাপ অসুখ হয়েছে। আমি তখনো জানি না, কী অসুখ! কয়েকদিন পর আরো কিছু টেস্টের পর আমি জানতে পারি আমার লিউকেমিয়া হয়েছে। তখন উঠে দাঁড়ানোর বা নিজে নিজে হাঁটার শক্তি আমার নেই। গুগলে সার্চ করে বুঝি লিউকেমিয়া কী! অনেকটা ভয়েই আমার দমবন্ধ অবস্থা!

মার্চ মাসের প্রথম দিকে ভর্তি হই ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। এই অপরিচিত শহরে একমাত্র সঙ্গী আমার স্বামী আজিজুল হক। এখানেও নানা ধরনের টেস্ট। শরীরের নানা উপাদান ইতোমধ্যে ভারতেও পাঠানো হয়েছে টেস্টের জন্য।

জীবনের ছোট পরিসরে স্বামী ও কনে সন্তান নিয়ে আমি আমার মতো করেই ছিলাম। কিন্তু লিউকেমিয়া আমার জীবনটাকে তছনছ করে দিচ্ছে। প্রথমে আমি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ৯ তালা ( ডিপার্টমেন্ট - Hematology) ৯০২ নম্বর ওয়ার্ডে ৩৭ নাম্বার বেডে চিকিৎসাধীন ছিলাম। এখন হাসপাতল কর্তৃপক্ষ বিশেষ সুরক্ষার কথা চিন্তা করে আমাকে ১০ তলার HDO বিভাগে চিকিৎসা দিচ্ছেন। চিকিৎসা করছেন অধ্যাপক অখিল রঞ্জন বিশ্বাস।

বর্তমানে শারীরিক, মানসিক, আর্থিক ভাবে এক কঠিন যুদ্ধের ভেতর দিয়ে যাচ্ছি আমি। শরীরের যন্ত্রনা তো আছেই। আমি পড়ে আছি ঢাকা মেডিক্যালে। কক্সবাজারের রামুতে আমার তিনবছরের কনে সন্তান আত্মীয় স্বজনের দেখভালে আছে। ঢাকা মেডিক্যালের দুর্বিষহ পরিবেশ, নিজের মনের ভেতর নানা ধরনের ভয়, হতাশা, চাপ, সন্তানের জন্য দু:শ্চিন্তা- সব মিলিয়ে এক অন্যরকম অবস্থা!

সবচেয়ে বড় সমস্যা টাকার সমস্যা। আমার স্বামী ও চিকিৎসকরা আপ্রাণ চেষ্টা করছেন আমাকে সুস্থ করে তোলার। কিন্তু টাকা তো নেই! নানা রকম ধার দেনা করে ডাক্তার, হাসপাতাল, রক্ত, ওষুধপত্র- এসব খরচ চলেছে এতোদিন। কিন্তু এখন আর চলছে না। এখনো কেমোথেরাপি দেওয়া শুরু হয়নি। জানি না, কীভাবে যুদ্ধ পাড়ি দিব?

মাত্র একমাস বয়সে মাকে হারিয়েছিলাম। মায়ের স্নেহ যেমন পাইনি তেমনি মায়ের চেহারা বা কোন স্মৃতিও আমার মনে নেই। এ কোল ও কোলে বড় হওয়া আমি পড়াশোনা করেছি অনেক সংগ্রামের ভেতর দিয়ে। কক্সবাজার সিটি কলেজ থেকে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ থেকে অনার্স সম্পন্ন করেছি। অনেক আগে থেকেই ছোট খাট কাজ করেছি। স্থায়ীত্বশীল উন্নয়নের জন্য সংগঠন - ইপসা'য় চাকরী করতাম। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোলান্ড ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে বাংলাদেশে ইউএসএইড- এর ফান্ড বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেকের মতো আমিও বেকার হয়ে যাই। আমার স্বামী বর্তমানে একটা এনজিওতে জুনিয়র পোস্টে চাকরী করে। কিন্তু আমার পেছনে ছোটাছুটি করতে করতে ওরও চাকরী এখন যায় তখন যায় অবস্থা!

আপনারা জা‌নেন ক্যান্সার রোগের চিকিৎসার জন্য অনেক অর্থের প্রয়োজন। ঢাকা মেডিক্যালে প্রতিদিন প্রচুর টাকা খরচ হয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে খরচ হয়ে গেছে কয়েক লাখ টাকা। যার বেশীরভাগই গ্রামে ও আত্মীয় স্বজনের কাছে ধারদেনা করে সংগ্রহ করা হয়েছে। ঘরে সামান্য স্বর্ণ ছিল। তাও বিক্রী হয়েছে শুরুর দিকে।

ডাক্তাররা বলছেন, সঠিক চিকিৎসা পেলে সাত আট মাসের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরা সম্ভব। কিন্তু তার জন্য প্রয়োজন টাকা। আর টাকার প্রশ্নেই আমার স্বপ্নগুলো থমকে যাচ্ছে!

আমার বর্তমান বয়স ছাব্বিশ। এ সুন্দর পৃথিবীতে এ আর এমন কী বয়স! অনাদরে অবহেলায় বড় হলেও মানুষকে আপন করে ভালোবাসা দিয়ে বাঁচার আনন্দ পেয়ে গিয়েছিলাম। এ ছন্দপতনে জানি না ভাগ্যে কী আছে! আমার এখন ভয় হচ্ছে, আমার মেয়েটাও আমার মতো মা হারা হয়ে বড় হবে না তো!

আমাকে ছয়টি কেমোথেরাপী দিতে হতে পারে। প্রতিটা কেমোথেরাপির খরচ কতো হতে পারে তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। কেমো প্রতি খরচ ছয় হাজার, দশ হাজার, পনের বিশ, চল্লিশ হাজার আছে। এখনো পর্যন্ত শরীরে কোনটা ম্যাচ হবে বলা যাচ্ছে না। খরচটা শরীরে ম্যাচ হওয়ার উপর নির্ভর করবে। ডাক্তারদের বক্তব্য অনুযায়ী, তুলনামূলক ভাবে কেমোথেরাপীর চেয়ে অন্যান্য খরচ বেশী। যেমন : কেমো দেওয়ার পর প্লাটিলেট কমে যায়। একটা প্লাটিলেটের দাম আঠারো হাজার টাকা। সাথে বিভিন্ন ওষুধ, রক্ত লাগার সম্ভাবনা তো আছেই। এছাড়া কেমোথেরাপি দেয়ার পর শরীরে অন্যান্য প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। এছাড়া যাতায়াত, প্রত্যেকদিন নানা রকমের টেস্ট, ওষুধ, হাসপাতালের দৈনন্দিন খরচ- এসব তো লেগে আছেই।

প্রতিদিনই পানির মতো টাকা খরচ হচ্ছে। আমার চিকিৎসক (ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের হ্যামাটোলজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক অখিল রঞ্জন বিশ্বাস) এর বক্তব্য অনুযায়ী, সবমিলিয়ে ১২- ১৫ লাখ টাকার ব্যবস্থা হলে আমার পরিপূর্ণ চিকিৎসা হওয়া সম্ভব।

যেখানে গলা পর্যন্ত ধার দেনায় ডুবে আছি সেখানে এতো টাকার কথা শুনে চোখে সর্ষেফুল দেখছি। আমি জানি না, এতো টাকা কোথেকে আসবে বা কী হবে!

তাই, আপনাদের সকলের কা‌ছে আমি বাঁচার জন্য মানবিক আবেদন করছি। আমি বাঁচতে চাই। আমার বয়স মাত্র ২৬ বছর। আমার হাজবেন্ড আর আমার কন্যাকে (৫ বছর) নিয়ে আমার ছোট্ট একটা পরিবার আছে। এই আলো ঝলমলে সুন্দর পৃথিবীতে আমি সুস্থ ভাবে বাঁচতে চাই। আপনাদের মাঝে থাকতে চাই।

b kash: 01822 978553

Account No:
Daliah Sultana
03734005087
Saving Account
Cox'sBazar Branch
Standard Bank Ltd

For more information, please contact, Ehsan Nazim: [email protected]

Your donation is tax-deductible in the USA. Please use your PayPal-generated receipt for tax purposes.

Project created on 04/14/2025

Pay Now